কেমন হবে যদি কোনো সময় এমন হয় যে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা চলা অবস্থায় কোনো দর্শক নেই? কেমন লাগবে সেই ম্যাচে খেলতে থাকা দুই দলের খেলোয়াড়দের? ভেবে দেখেছেন কি? এরকমটা ভাবাই যায় না, তাই না? জ্বি, ক্রিকেট খেলাকে এতটা জনপ্রিয় করে তোলার পিছনে শুধু যে মহারথি ক্রিকেটারদেরই কৃতিত্ব রয়েছে তা নয়, গ্যালারীতে বসে খেলা দেখতে আসা দর্শকদের কৃতিত্বও কোনো অংশে কম নয়। স্টেডিয়ামে আসা দর্শকদের চিত্কার-চেঁচামেচি ও আনন্দ-উল্লাসই ক্রিকেট ম্যাচকে উত্তেজনায় ভরপুর করে তোলার মূলমন্ত্র।
ক্রিকেট বিশ্বে ভারত অন্যতম প্রধান একটি দল এবং দেশটির প্রায় দেড়শ‘রও বেশি জনসংখ্যার এই দেশের প্রায় প্রতিটি গলিতে ক্রিকেট খেলা হয়, প্রতিটি ঘরেই জাতীয় দলের বা ঘরোয়া দলের বিজয় মহোত্সবের মত উদযাপিত হয়। বিশ্ব ক্রিকেট বাণিজ্যেও ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্রিকেটের অন্যতম তীর্থস্থান এই ভারতেই এমনও স্টেডিয়াম রয়েছে যেগুলোর আসন সংখ্যা ৪০,০০০ এরও কম। চলুন জেনে নিই ভারতের সবচেয়ে ছোট ১০ টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম সম্পর্কে।
ভারতের সবচেয়ে ছোট ১০ টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম
এখানে ‘ছোট‘ বলতে স্টেডিয়ামের আকার বুঝানো হচ্ছে না, বরং স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে দর্শকদের জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যার কথা বুঝানো হয়েছে। তবে স্বল্প সংখ্যক আসন মানেই কিন্তু খেলা দেখার অভিজ্ঞতা কোনো অংশ কম উপভোগ্য হবে এমনটা নয় মোটেও, হ্যাঁ, খেলা দেখার উত্তেজনা হয়তো কিছুটা কমে যায় কারণ আনন্দ-উল্লাসের তোরজোর কিছুটা কমে যায় আর কি। নিচের তালিকায় এরকমই ১০ টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্রমিক নং | স্টেডিয়ামের নাম | আসন সংখ্যা |
০১ | ধরমশালা স্টেডিয়াম, ধরমশালা, হিমাচল প্রদেশ | ২৩,০০০ |
০২ | সোয়াই মানসিংহ স্টেডিয়াম, জয়পুর, রাজস্থান | ২৩,১৮৫ |
০৩ | ড. ওয়াইএসআর রেড্ডি এসিএ-ডিসিসিএ স্টেডিয়াম, বিশাখাপত্তনম, অন্ধ্র প্রদেশ | ২৭,৫০০ |
০৪ | স্বরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়াম, রাজকোট, গুজরাট | ২৮,০০০ |
০৫ | ইন্দ্রজিত সিংহ বিন্দ্রা স্টেডিয়াম, মোহালি, পাঞ্জাব | ২৮,০০০ |
০৬ | হোলকার ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ইন্দোর, মধ্য প্রদেশ | ৩০,০০০ |
০৭ | চণ্ডীগড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চণ্ডীগড়, পাঞ্জাব | ৩০,০০০ |
০৮ | গ্রীন পার্ক ইন্টারন্য়াশনাল স্টেডিয়াম, কানপুর, উত্তর প্রদেশ | ৩২,০০০ |
০৯ | ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম, মুম্বই, মহারাষ্ট্র | ৩৩,১০৮ |
১০ | মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম, পুনে, মহারাষ্ট্র | ৩৭,৪০৬ |
৩০,০০০ এর কম আসন বিশিষ্ট ক্রিকেট স্টেডিয়াম
ধরমশালা স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ২৩,০০০
হিমালয়ের পর্বতমালার অনিন্দ্য সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে, হিমালয়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত ধরমশালায় নির্মিত ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি একদিকে যেমন ভারতের সবচেয়ে ছোট স্টেডিয়াম, অন্যদিকে তেমনি সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামও। কাজেই প্রিয় দলের হতাশাজনক পার্ফর্ম্যান্সের কারণে দর্শকদের মন খারাপ হওয়ার কোনো অবকাশ নেই! বরং গ্যালারীতে বসে বসেই দর্শক উপভোগ করতে পারবে হিমালয় পর্বতমালার নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।
মাত্র ২৩,০০০ আসন সংখ্যা বিশিষ্ট এই স্টেডিয়াম উদ্বোধন হওয়ার পরে বেশ কিছু সময় পর্যন্ত এখানে শুধুমাত্র ঘরোয়া ক্রিকেটই খেলা হতো। ২০১৩ সালে এই স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচ খেলা হয়। তবে এই স্টেডিয়ামটিতে কিন্তু ৩০০ এরও বেশি রান সংগ্রহ করা অন্যান্য স্টেডিয়ামের মত অতটা সহজ নয়। দিনের পর দিন ভারতে ক্রিকেটের উন্মাদনা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রকৃতির প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতা। তাই এরকম একটি স্টেডিয়ামে দর্শক সংখ্যা যত কম হবে প্রকৃতির জন্য তা ততটাই মঙ্গলজনক।
সোয়াই মানসিংহ স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ২৩,১৮৫
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে অবস্থিত সোয়াই মানসিংহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ভারতের সবচেয়ে ছোট স্টেডিয়ামের এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আসন সংখ্যা মাত্র ২৩,১৮৫ হওয়া সত্বেও জয়পুরের ক্রিকেট ভক্তরা স্টেডিয়ামে নিয়মিতই ভীড় জমায় প্রিয় দলের খেলোয়ারদের সমর্থন করতে। তবে এই স্টেডিয়ামটি কিন্তু ভারতীয় স্পিন বোলার বা অন্য কোনো স্পিন বোলারদের জন্য একেবারে আদর্শ, কিছুটা বৈচিত্র্যময় পেস বোলারদের জন্যও এই মাঠ একেবারে খারাপ না।
তুলনামূলকভাবে স্লো এবং টার্নিং পিচ হওয়ার কারণে এই মাঠে খেলতে আসা ব্যাটসমেন খুব একটা বড় স্কোর করে উঠতে পারেন না। ২০২৩ সালে ৩ বছর পরে এই স্টেডিয়ামে আইপিএল এর ৪ টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। আর হিন্দী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা শিল্পা শেঠির মালিকানাধীন, প্রদেশটির আইপিএল দল রাজস্থান রয়্য়াল্স কে সমর্থন করতে ভীড় করে স্থানীয় দর্শক ও ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ড. ওয়াইএসআর রেড্ডি স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ২৭,৫০০
ড. ওয়াইএসআর রেড্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনম শহরে অবস্থিত। ঠিক পাশেই পশ্চিমের সমুদ্র উপকূল থাকায় এই স্টেডিয়ামের আশেপাশের বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে যা বোলারদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এই স্টেডিয়াম তৈরি হওয়ার পর থেকে এখানে বছরে ২-৩ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে যেগুলোর সবই সীমিত ওভারের, সাদা বলে খেলা ম্যাচ। ভারতের সবচেয়ে ছোট স্টেডিয়ামের এই তালিকায় ৩য় অবস্থানে থাকা ২৭,৫০০ দর্শকের আসন সংখ্যা বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামটি অন্ধ্র ক্রিকেট দল ও ঘরোয়া ম্যাচের জন্য ‘হোম গ্রাউণ্ড‘ হয়ে উঠেছে।
স্বরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ২৮,০০০
আইপিএল এর প্রাক্তন দল গুজরাট লায়ন্স এর হোম গ্রাউণ্ড ছিল এই স্বরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এক খাপে দুই তলোয়ার যে থাকে না তার বেশ দু:খজনক একটি দৃষ্টান্ত হলো এই স্বরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়াম যা গুজরাট প্রদেশের রাজকোট শহরে অবস্থিত। আসন সংখ্যা ২৮,০০০ হলেও এক সময়ে এই মাঠে নিয়মিতভাবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতো, কিন্তু বর্তমানে তা আর হয় না। এর কারণ, একই প্রদেশের আহমেদাবাদ শহরে রয়েছে ভারতের সবচেয়ে বড়, তথা বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ‘নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম‘, আর সেই স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা ১৩২,০০০ এবং সেখানেই ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত একদিনের বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি আয়োজিত হয়।
ইন্দ্রজিত সিংহ বিন্দ্রা ক্রিকেট স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ২৮,০০০
ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত ২০১৬ সালের একদিনের বিশ্বকাপের ম্যাচটি পাঞ্জাবের মোহালি শহরে অবস্থিত এই ইন্দ্রজিত সিংহ বিন্দ্রা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, বা আইএস বিন্দ্রা স্টেডিয়াম,-এই আয়োজিত হয়েছিল। একই সাথে এই স্টেডিয়ামটি আইপিএল-এ বলিউড অভিনেতা প্রিতি জিন্টার দল ‘পাঞ্জাব কিংস‘-এরও হোম গ্রাউণ্ড। কাজেই এখানে অনুষ্ঠিত ম্যাচ দেখার জন্য স্থানীয় দর্শক ও ক্রিকেটপ্রেমীদের ভীড়ের কোনো অভাব হয় না। যদিও মাত্র ২৮,০০০ আসন সংখ্যা বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামে খুব বেশি সংখ্যক আন্তর্জাতিক বা আইপিএল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় না, আর তাই এসব ছোট ছোট স্টেডিয়াম তেমন একটা জনপ্রিয়তাও অর্জন করতে পারেনা।
ইন্দ্রজিত্ সিংহ বিন্দ্রা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মোহালি
৪০,০০০ এর কম আসন-বিশিষ্ট ক্রিকেট স্টেডিয়াম
হোলকার ক্রিকেট স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ৩০,০০০
১৯৯০ সাল ইন্দোরের মহারাজা যশবন্ত সিংহ হোলকার, ভারতের সবচেয়ে ছোট ১০ টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের এই তালিকায় অবস্থিত ৬ষ্ঠ স্টেডিয়াম- হোলকার ক্রিকেট স্টেডিয়াম- প্রতিষ্ঠা করেন। ৩০,০০০ দর্শকের আসন বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামটির মাঠ ব্যাটসম্যানদের জন্য অনুকূল এবং এই মাঠের আউটফিল্ডও যথেষ্ট দ্রুত, তার মানে এই মাঠে চার রানের উদ্দ্যেশ্যে ব্যাট দিয়ে মেরে পাঠিয়ে দেওয়া বল বেশ দ্রুতই গন্তব্যে পৌঁছায়। আর তাই এই মাঠে ব্যাটসম্যানের করা বড় বড় স্কোর দর্শকদের যথেষ্ট বিনোদিত করে। এই স্টেডিয়ামের একটি আকর্ষণীয় বিষয় হলো এখানকার ফ্লাডলাইটগুলো ইংরেজি বর্ণমালার বড় হাতের এম অক্ষরের আদলে সাজানো, যা ‘মধ্য প্রদেশ‘ নামটিকে বুঝানোর জন্য করা হয়েছে।
চণ্ডীগড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ৩০,০০০
ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের চণ্ডীগড় শহরটি এর সবুজ প্রকৃতি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রসিদ্ধ। আর এ শহরেই রয়েছে ৩০,০০০ আসন বিশিষ্ট, ভারতের সবচেয়ে ছোট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের এই তালিকার ৭ম স্টেডিয়াম- চণ্ডীগড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামটি পাঞ্জাব ও হরিয়ানা উভয় প্রদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট দলের হোম গ্রাউণ্ড।
২০১১ সালের একদিনের বিশ্বকাপের বেশ কিছু ম্যাচ সহ এই স্টেডিয়ামে বেশ কিছু বড় বড় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফ্লাডলাইটস্ সংযোজনের পর থেকে এই স্টেডিয়ামে রাতের বেলাতেও ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজিত হয়ে থাকে। যার ফলে এখানে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার দর্শকদের বেশ ভালই ভীড় হয়।
গ্রীন পার্ক ইন্টারন্য়াশনাল স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ৩২,০০০
১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত, উত্তর প্রদেশের কানপুর শহরে অবস্থিত গ্রীন পার্ক ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম, এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও ঐতিহ্যের কারণে ভারতের সবচেয়ে পুরনো ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসেবে বিবেচিত। মাত্র ৩২,০০০ দর্শকের আসন বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামটি ভারতের সবচেয়ে ছোট ১০ টি স্টেডিয়ামের এই তালিকায় থাকা ৮ম স্টেডিয়াম।
এটা বোধ হয় ভারতের একমাত্র স্টেডিয়াম, যেখানে প্রাদেশিক ক্রিকেটের সাথে কোনো সম্পর্ক না থাকা সত্বেও, উত্তর প্রদেশের বেশিরভাগ ঘরোয়া ম্যাচই এখানে আয়োজিত হয়ে থাকে। এছাড়া এখনো পর্যন্ত টেস্ট, ওডিআই ও টিটোয়েন্টি সহ মোট ৩৭ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচও এখানে আয়োজিত হয়েছে।
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ৩৩,১০৮
ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের মধ্যমণি এবং হিন্দী চলচ্চিত্রের তীর্থস্থান মুম্বইতে অবস্থিত ওয়াংখেড়ে ক্রিকেট স্টেডিয়াম একাধিক কারণে প্রসিদ্ধ। ২০১১ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের বিজয় অর্জনের অবিস্মরণীয় স্মৃতিবিজড়িত এই স্টেডিয়াম সকল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীর মনেই বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মুম্বই ইণ্ডিয়ান্স- নিতা আম্বানির আইপিএল দল ও আইপিএল এর বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হোম গ্রাউণ্ড এই স্টেডিয়াম। আর আইপিএল-এরই বিগত কোনো বছরের এক ম্যাচের শেষে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের সাথে ঘটে যাওয়া বিতর্কিত এক ঘটনার ক্ষেত্রও এই স্টেডিয়াম, যে ঘটনার জের ধরে শাহরুখকে ৫ বছরের জন্য এই স্টেডিয়ামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।
তবে ভারতের সবচেয়ে ছোট ১০ টি স্টেডিয়ামের এই তালিকায় এই স্টেডিয়ামের নাম থাকাটা সত্যিই খুব অবাক করা ব্যাপার। অসংখ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচ সহ ৩৩,১০৮ জনের আসন সংখ্যা বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামে এখনো পর্যন্ত মোট ১০৮ টি আইপিএল ম্যাচ আয়োজিত হয়েছে যেগুলোর প্রতিটিতেই স্টেডিয়ামটির গ্যালারী ছিল দর্শকের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। এই স্টেডিয়ামের মাঠের সীমানা তুলনামূলকভাবে ছোট ও আউটফিল্ডের দূরত্ব কম হওয়ায় এখানে বোলারেরা, বিশেষ করে ফাস্ট বোলারেরা, খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনা। অর্থাত্, এই স্টেডিয়ামের পিচ ব্যাটসম্যানদের জন্য অনুকূল।
মুম্বই শহরে অবস্থিত বিখ্যাত ওয়াংখেড়ে ক্রিকেট স্টেডিয়াম
মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম: আসন সংখ্যা ৩৪,৪০৬
ভারতের সবচেয়ে ছোট ১০ টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ স্টেডিয়ামটিও মহারাষ্ট্র প্রদেশেই অবস্থিত- পুনে শহরের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ক্রিকেট স্টেডিয়াম, যার আসন সংখ্যা মাত্র ৩৪,৪০৬। আইপিএল-এ অংশগ্রহণকারী প্রাক্তন দুইটি দল- পুনে ওয়্যারিয়ার্স ও রাইজিং পুনে সুপারস্টার্স- এর হোম গ্রাউণ্ড ছিল এই স্টেডিয়াম। স্বভাবতই এই দুই দলের খেলার সময়ে স্টেডিয়ামে পুনের ক্রিকেট ভক্তরা সরাসরি ম্যাচ দেখার জন্য বেশ ভালই ভীড় জমাতো। এই স্টেডিয়ামের মাঠের কথা বিবেচনা করলে বলতে হয় ম্যাচের প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন বলের খেলায় ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে পারলেও, খেলা যতই এগোতে থাকে ততই এই মাঠে বোলারদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে থাকে।
ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ভক্ত, সংবাদ মাধ্যম, সাংবাদিক, লেখক, বিভিন্ন ব্য়বসায় প্রতিষ্ঠান, উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞাপণ সংস্থা থেকে শুরু করে অনেকেরই স্বার্থ জড়িত থাকে- কারও স্বার্থ শুধুই বিনোদনমূলক, কারও বা বাণিজ্যিক। আর ভারতের মত বৈচিত্র্যময় ও প্রায় দেড়শ কোটি জনসংখ্যার দেশে, যেখানে ক্রিকেটকে এক রকম ধর্মই মনে করা হয়, একদিকে যেমন রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম, বিখ্যাত ইডেন গার্ডেন (আসন সংখ্যা ৬৮,০০০) স্টেডিয়াম, তেমনি রয়েছে এই ১০ টি স্টেডিয়াম যেগুলোর আসন সংখ্যা ৪০,০০০ এরও কম। তবে ভারতে বাড়তে থাকা ক্রিকেটের উন্মাদনার কারণে যে দেশটিতে ভবিষ্যতে আরও অনেক স্টেডিয়াম গড়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য।